📢 পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি: সময়ের ডাক
🔍 ভূমিকা
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হলো ন্যায্য ও প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে—বর্তমানে প্রচলিত প্রথম-গত-দাগে বিজয়ী (First Past the Post – FPTP) পদ্ধতি কি সত্যিই জনগণের সঠিক মতপ্রকাশের প্রতিফলন ঘটায়?
এ প্রশ্নের প্রেক্ষিতেই বারবার উঠে আসছে একটি বিকল্প নির্বাচন ব্যবস্থা: Proportional Representation বা পিআর (PR) পদ্ধতি।
⚖️ পিআর (PR) পদ্ধতি কী?
Proportional Representation (PR) হলো এমন একটি নির্বাচন ব্যবস্থা যেখানে জনগণের মোট ভোটের অনুপাতে রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী আসন পায়। অর্থাৎ, যদি কোনো দল ৩০% ভোট পায়, তাহলে তারা সংসদের ৩০% আসন পাবে।
এই পদ্ধতিতে নির্বাচনের ফলাফলে ভোটারের ইচ্ছার প্রকৃত প্রতিফলন ঘটে, যা FPTP পদ্ধতিতে অনেক সময় বিকৃত হয়।
🚫 বর্তমান পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা
- সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছাড়াই একটি দল সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ আসন পেয়ে যেতে পারে
- প্রচুর ভোট পেয়ে থেকেও অনেক দল বা প্রার্থী আসন পায় না
- ছোট দল ও সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব প্রায় অনুপস্থিত
- একচেটিয়া রাজনীতির সুযোগ তৈরি হয়
✅ পিআর পদ্ধতির সুবিধাসমূহ
- ভোটারের মতামতের বাস্তব প্রতিফলন
- সকল দলের জন্য সমান সুযোগ
- দ্বিপক্ষীয়তা ভেঙে নতুন চিন্তা ও নেতৃত্বের উত্থান
- সংখ্যালঘু, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঠিক প্রতিনিধিত্ব
- সহনশীল ও জবাবদিহিমূলক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা
📈 আন্তর্জাতিক উদাহরণ
অনেক উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ যেমন—জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, সুইডেন, নিউজিল্যান্ড—PR পদ্ধতি ব্যবহার করে এবং সেখানে ভোটারদের সন্তুষ্টির হার অনেক বেশি।
"PR পদ্ধতি শুধু একটি ভোটিং সিস্টেম নয়, এটি একটি উন্নত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতন্ত্রের পথ।"
📣 কেন এখন এই দাবি?
সাম্প্রতিক সময়ের নির্বাচনী বিতর্ক, একতরফা ভোট, অকার্যকর সংসদীয় বিরোধী দল এবং জনগণের অনাস্থার ফলে PR ভিত্তিক পদ্ধতির দাবি নতুন করে জোরালো হয়েছে।
নাগরিক সমাজ, তরুণরা, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং বিকল্প রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মগুলো এই পদ্ধতিকে দেশের ভবিষ্যতের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করছেন।
📌 উপসংহার
বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে কার্যকর ও প্রতিনিধিত্বমূলক করতে হলে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন। PR পদ্ধতি হতে পারে সেই কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের প্রথম ধাপ। এখন সময় এসেছে, “কে জিতল” নয়, বরং “কে কতটা জনগণের সমর্থন পেল”— সেই প্রশ্নে গুরুত্ব দেওয়ার।